• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯

অপরাধ

ভয়াবহ ব্যাংক জালিয়াতি, বিক্রীত জমি বন্ধক রেখে ২৭০ কোটি টাকা ঋণ

  • ''
  • প্রকাশিত ২৩ নভেম্বর ২০২৩

বিক্রি করে দেওয়া জমির দলিল বন্ধক রেখে প্রতারণার মাধ্যমে ফার্স্ট সিকিউরিটি  ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড থেকে ২৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। ২০২২ সালের শেষদিকে এসব জমি বিক্রি করে দিলেও ঋণ নেন চলতি বছরের জুন মাসে। ঋণের টাকা কোথায় বিনিয়োগ করা হয়েছে, তা কিছুই জানে না ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্র প্রতিনিয়ত এসব কাজ করছে।ব্যবস্থা না নিলে বন্ধ হবে না এ জাতীয় অনৈতিক কর্মকান্ড।

ফার্স্টসিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২২ জুন রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, তার ছেলে মেহেদী হাসান দীপু, কাউসার আহমেদ অপু ও মালিহা হোসেন জোয়ার সাহারা, ভাটারা ও গুলশান মৌজার৩৩৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ জমিবন্ধক রেখে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখা থেকে ২৭০কোটি ঋণ নিয়েছেন। এরমধ্যে ভাটারা মৌজার চারটি প্লটে রফিকুল ইসলামের বিক্রি করে দেওয়া ৯৩দশমিক ৮৭ শতাংশ জমিওরয়েছে।

ব্যাংকে দেওয়া নথি থেকে জানা গেছে, রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ২০১৭ সালের ২০ফেব্রুয়ারি ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টিডেভেল পমেন্ট  লিমিটেডের কাছ থেকে এওয়াজবদলদলিল মূলে জমির মালিক হয়েছিলেন। এর মধ্যে ভাটারামৌজার ই ব্লকের ৪৮২, ৪৮৩, ৪৮৪, ৪৮৭, ৪৮৮ও ৪৮৯ প্লটের ২৮দশমিক ১৩ শতাংশ, ৫০৭, ৫০৮, ৫১১ ও ৫১২প্লটের ১৫ দশমিক ৫৩শতাংশ, ৫৩০, ৫৩১, ৫৩২, ৫৩৩, ৫৩৪ ও ৫৩৫প্লটের ২২ দশমিক ৭০শতাংশ, ৫৫১, ৫৫২, ৫৫৬, ৫৫৭ ও ৫৫৮ প্লটের২৭ দশমিক ৫১ শতাংশ জমিরয়েছে।

 

 খোঁজনিয়ে জানা গেছে, উল্লিখিত জমি ২০২২ সালের ১৮এপ্রিল সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ নিলেও রফিকুল  ইসলাম তা পরিশোধ করে দেন একই বছরের ২৯সেপ্টেম্বর। একই দিন এসব জমির  মধ্যে ৪৮২, ৪৮৩, ৪৮৪, ৪৮৭, ৪৮৮ ও ৪৮৯প্লটের ২৮ দশমিক ১৩শতাংশ ও ৫৩০, ৫৩১, ৫৩২, ৫৩৩, ৫৩৪ ও৫৩৫ প্লটের ২২ দশমিক ৭০শতাংশ  আবুল কাশেম  গংদের কাছে বিক্রি করে দেন রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া ২০২২সালের ২১ নভেম্বর ৫৫১, ৫৫২, ৫৫৬, ৫৫৭ ও৫৫৮ প্লটের ২৭ দশমিক ৫১শতাংশ জমি বিক্রি করেন ইমরান করিমের কাছে।  এদিকে গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি তামান্না সুলতানার কাছে ৫০৭, ৫০৮, ৫১১ ও ৫১২ প্লটের১৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ জমি বিক্রি করে দেন রফিকুল ইসলাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতবছরের ৮ ডিসেম্বর ইস্টওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট কর্তৃপক্ষ ইমরান করিমের পক্ষে জমির মালিকানা পরিবর্তনের অনুমোদন দিয়েছে। এ ছাড়া আবুল কাশেম গংদের মালিকানাধীন ২৮ দশমিক ১৩শতাংশ এবং তামান্না সুলতানার নামে ১৫ দশমিক ৫৩শতাংশ জমির মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে চলতি বছরের ৩১জানুয়ারি। এ ছাড়াও আবুলকাশেম  গংদের মালিকানাধীন ২২ দশমিক ৭০শতাংশের আরেকটি প্লটের মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে চলতি বছরের ১৯মার্চ।

ব্যাংকসূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২২ জুন রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, তার ছেলে মেহেদীহাসান দীপু, কাউসার আহমেদ অপু ও মালিহা হোসেন জোয়ারসাহারা, ভাটারা ও গুলশান মৌজার৩৩৭ দশমিক ৫৯ ডেসিমেল জমিবন্ধক রেখে ফার্স্ট সিকিউরিটিইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখা থেকে ২৭০কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন।এর মধ্যে ভাটারা মৌজার চারটি প্লটে রফিকুল ইসলামের বিক্রি করা ৯৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ জমিও রয়েছে। এসব জমি তিনি এর আগে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে  বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছিলেন। ঋণ পরিশোধের পরপরই জমিগুলো অন্যত্র বিক্রি করে দেন। কিন্তু বিক্রির তথ্য গোপন রেখেই ফার্স্ট  সিকিউরিটি  ইসলামী ব্যাংক থেকে আবারও ২৭০কোটি টাকা ঋণ নেন। ঋণের বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথায়, কোনখাতে বিনিয়োগ করেছেন, সে বিষয়ে ব্যাংকের কাছে কোনো তথ্য নেই। তিন দফায় এসব অর্থছাড়করা হলেও প্রথম ওদ্বিতীয় কিস্তির টাকা কোথায় বিনিয়োগ হয়েছে সেটাও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন মনে করেনি সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। এর মধ্যেই ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় করেছে ব্যাংক।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads